অনলাইন মার্কেটিং

অ্যামাজন এফিলিয়েট কি? অ্যামাজন থেকে আয়।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আসসালামু আলাইকুম।আপনার অ্যামাজন সম্পর্কে জানার যদি আগ্রহ থাকে। আপনি যদি জানতে চান অ্যামাজন এফিলিয়েট কি? অ্যামাজন এফিলিয়েট কাদের জন্য? অ্যামাজন এফিলিয়েট থেকে কিভাবে আয় করতে হয়? ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আমার এই আর্টিকেলে থাকবে।

আর সেজন্য আপনাকে আমার নিবন্ধনটি মনোযোগ সহকারে ফাস্ট টু লাস্ট পর্যন্ত  ধারাবাহিকভাবে পড়তে হবে। আর কোন লেখায় স্কিপ করা যাবে না। তাহলে আপনি জানতে পারবেন অ্যামাজন এফিলিয়েট রিলেটেড বিষয়গুলো সম্পর্কে। 

আপনি জানলে আশ্চর্য হয়ে যাবেন যে, বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক জনেই অ্যামাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রামের সাথে জড়িত আছে। আর  এফিলিয়েট কে ফোকাস করে নিত্য নতুন ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করেছে।

আমাদের দেশে অনেক জনেই অ্যামাজন এফিলিয়েটে কাজ করি বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছে। আপনি যদি মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করেন। তাহলে আপনিও অনেক  অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

এফিলিয়েট কি?

অনলাইনে ই-কমার্সের মাধ্যমে আপনি কোন প্রোডাক্টের রিভিউ দিলেন। ধরেন যে, সেই প্রোডাক্টের রিভিউটি কোন ক্রেতা দেখলেন এবং প্রোডাক্টি  ক্রয় করলেন। সেখান থেকে আপনি যে, কমিশন পাবেন মূলত এটাই  এফিলিয়েট।

বিষয়টি মনে হয় এখন আপনার বোধগম্য হয়নি। তাহলে উদাহরণের মাধ্যমে আরেকটু ক্লিয়ার করে বলি।

বর্তমানে আমাদের দেশে Daraz হল একটি জনপ্রিয় সাইট। মনে করুন আপনি realme 25 মোবাইল ফোনটির রিভিউ দিবেন। তো আপনাকে যেটা করতে হবে সেটি হলো মোবাইল ফোনটির সকল তথ্য তুলে ধরতে হবে। যেমনঃ ফোনটি ডিসপ্লে কত? ক্যামেরার রেজুলেশন কিরকম? ব্যাটারি ভোল্টেজ কত ইত্যাদি। উপরোক্ত তথ্য সকল তুলে ধরাটাই রিভিউ।

এই যে আপনি মোবাইল ফোনের রিভিউ দিলেন। সেখান থেকে যদি কোনো ক্রেতা উক্ত মোবাইল ফোনটি ক্রয় করেন। তাহলে মোবাইল ফোন কোম্পানি আপনাকে কিছু কমিশন প্রদান করবেন।

 কিভাবে এফিলিয়েট করতে হয়?

এফিলিয়েট করার সর্বপ্রথম শর্ত হচ্ছে, আপনাকে একটা ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করতে হবে। যেখানে আপনি কোম্পানির প্রোডাক্ট গুলো রিভিউ দিবেন।

 আপনাকে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকতে হবে। তবে বলে রাখা ভালো একেকটি কোম্পানির একেক রকম রুলস। আর আপনাকে রুলস গুলো ফলো করতে হবে।

তো যখন আপনি রুলস মেনে এফিলিয়েটে যুক্ত হবেন তখন আপনাকে লিংক প্রদান করা হবে। প্রোডাক্টটির প্রচার প্রচারণা চালানোর জন্য প্রদানকৃত লিংকটি আপনি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে, ইউটিউব চ্যানেলে( যদি থাকে) শেয়ার করতে হবে।

আপনার এফিলিয়েটে ক্লিক করে যখনই প্রোডাক্টি কিনবে, আর উক্ত প্রোডাক্ট থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।

 অ্যামাজন কি?

অ্যামাজন একটি মার্কিন বাণিজ্যিক কোম্পানি।যার সদরদপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের সিয়াটলে অবস্থিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি জনপ্রিয় সাইট হল অ্যামাজন।

মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা অনলাইনের মাধ্যমে পূরণ করে।

শুরুর দিকে জনপ্রিয়তা কম ছিল, কিন্তু ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই অ্যামাজন  প্লাটফর্মে বইয়ের রিভিউ দিত। তখন থেকে এর যাত্রা শুরু হয়।

কালের বিবর্তনে বইয়ের রিভিউ পর, এখন মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রোডাক্টের রিভিউ করছে অ্যামাজান। 

অ্যামাজান এফিলিয়েট কি?

অ্যামাজান এফিলিয়েট প্রোগ্রাম কে একত্রে বলা হয়ে থাকে Amazon Associates যার বাংলা অর্থ অ্যামাজনের সহযোগী। এফিলিয়েট এর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটকে মনিটাইজ করতে পারবেন।

অ্যামাজান এফিলিয়েট এ যুক্ত হতে আপনাকে www.amazon.com এ যাবেন।  Account create করে তাদের  Affiliate programms যুক্ত হবেন।

এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ যুক্ত হওয়ার পর আপনাকে বিভিন্ন প্রোডাক্টের এফিলিয়েটের লিংক দেওয়া হবে।এবং তা আপনারা কোন ওয়েবসাইটে প্রমোট করবেন। 

আপনার এফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করে কেউ যদি প্রোডাক্টটি ক্রয় করেন তাহলে আপনিন ১০% কমিশন পাবেন।

অ্যামাজন এফিলিয়েট কাদের জন্য?

মার্কেটিং এ যারা সফল ভাবে কাজ করে শুধু তারাই উন্নত করতে পারে। দুর্বল ব্যক্তির জন্য মার্কেটিং এ কাজ করা নেহাৎ অযথা হবে। 

অ্যামাজন এফিলিয়েট এ  কাজ করার পূর্বে আপনার নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর উপর জ্ঞান থাকতে হবে। 

১.ইনভেস্টমেন্ট

২. মার্কেটিং স্ট্রাটেজি

৩. মনিটরিং

 

তো ভিউয়াস, উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি আপনারা ফলো করেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনি অ্যামাজন এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফলতা অর্জন করতে পারবেন। তো বিষয়গুলো নিয়ে একটু আলোকপাত করা যাকঃ

ইনভেস্টমেন্ট

আপনি হয়তো বা নিশ্চয়ই অবাক হয়ে যাচ্ছেন যে, অ্যামাজনে কেন ইনভেস্ট করবেন। প্রশ্ন আপনার মনে জাগতেই পারে, তবে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। তাই স্কিপ না করে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন আমি আশাবাদী আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

বাংলা আমার মায়ের ভাষা। আমি শ্রদ্ধা জানাই আমার প্রিয় মাতৃভাষাকে। এখন কথা আছে ভাই, আপনি যদি অ্যামাজনে প্রোডাক্ট গুলোর রিভিউ করতে চান। তাহলে আপনাকে বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষা ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে।

দেখেন ভাই, আপনি যেহেতু অনলাইন থেকে ইনকাম করবেন। সেহেতু আপনাকে তো একটু পরিশ্রম করতে হবে তাই না। না হলে তো সবই বৃথা যাবে।

কাজের কথায় আসা যাক;অ্যামাজন এফিলিয়েট সম্পর্কে আপনাদের অনেকটা ধারণা তৈরি হয়েছে। কোম্পানির প্রোডাক্ট রিভিউ করলে, সেই রিভিউ দেখে ক্রয় করলে সেখান থেকে আপনারা কমিশন পাবেন।

ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ হচ্ছে ইংরেজি। এখন সমস্যা হচ্ছে যে,আপনি যদি অ্যামাজনে প্রোডাক্ট রিভিউ করেন তবে আপনাকে ইংরেজি দিয়ে পোস্ট করতে হবে। কারণ, বাংলা ভাষায় বা কয়টা দেশ জানে, তাই বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি শিখতে হবে।

এখন আপনি যদি অ্যামাজনে কাজ করতে চান। আর এদিকে যদি আপনার ইংরেজি ভাষা জানা না থাকে তাহলে তো সমস্যা রয়ে যায়। সমস্যা সমাধানের জন্য একজন ভালো ইংরেজি কনটেন্ট রাইটার প্রয়োজন। ভালো কনটেন্ট লেখার জন্য তাকে সম্মানি দিতে হবে। 

আর সর্বশেষ ধাপটি হলো এসইও করা। অ্যামাজন এফিলিয়েট আপনি একাই করছেন এটা একটা ভুল ধারণা। কারন, আপনার মত লক্ষ লক্ষ মানুষ এই পেশার সাথে জড়িত।

বুঝতেই পারছেন কম্পিটিশন কিরকম হবে। তাদের সবাইকে পেছনে ফেলে সার্চ ইঞ্জিনে আপনাকে টপ হতে হবে। মূলত এর জন্য আপনাকে এসইও করতে হবে। 

যখন আপনি এই কাজের জন্য অন্যজনকে দিয়ে করাবেন। তাকে এই কাজের জন্য মূল্য দিতে হবে।

 মার্কেটিং স্ট্রাটেজি

অ্যামাজন এফিলিয়েট করার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে মার্কেটিং এর কাজ কি? দেখুন এই পৃথিবীতে অনলাইন শপিং অনেক আছে।

তবুও কেন অ্যামাজন কে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। এর পেছনের কারণ হচ্ছে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা মার্কেটিং স্ট্রাটেজিতে আয় করতে পেরেছে।

আপনাকে দেখতে হবে অন্য দেশের মানুষের কাছে কোন প্রোডাক্ট গুলো বেশি পছন্দনীয়। আপনার বয়সের সমান কোন অডিয়েন্সকে টার্গেট করতে হবে। 

আপনি কিভাবে একটি প্রডাক্টকে প্রমোশন করবেন। কিভাবে প্রমোশন করলে রেফারেল লিংক এ বেশি বেশি ক্লিক আসবে।

তাই অ্যামাজন এফিলিয়েট করার আগে এই বিষয়গুলোর উপর লক্ষ দিতে হবে।

মনিটরিং

 আপনি যে সাইটটি ক্রিয়েট করছেন, তা আপনাকে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করতে হবে। কারণ, আপনার টার্গেট কতটুকু পূরণ করছেন তা আপনারা মনিটরিং এর মাধ্যমে জানতে পারবেন।

ঠিকমতো অডিয়েন্স পারেন কিনা? CTR কেমন আসছে? Impression কেমন আসছে?ইত্যাদি বিষয়গুলো সঠিকভাবে মনিটরিং করতে হবে।

এছাড়া CTR এবং Impression অনুযায়ী কিরকম প্রোডাক্টের সেল আসছে।সে বিষয়ে পাক্কা নজরদারি দক্ষতা থাকতে হবে। আপনি বুঝতে পারবেন আপনার এফিলিয়েট ওয়েবসাইটটিতে বৃদ্ধি কেমন হচ্ছে।

অ্যামাজন এফিলিয়েট শিখতে কতদিন সময় প্রয়োজন?

অ্যামাজন এফিলিয়েট শিখতে কতদিন সময় লাগবে তা বলা মুশকিল। আপনি চেষ্টা করলে অল্প দিনের মধ্যে শিখতে পারবেন। মোটামুটি ভালোভাবে শিখতে চাইলে ৮-১০ মাসের প্রয়োজন। 

এফিলিয়েট ভালোভাবে রিসার্চ করুন করুন এবং সে অনুযায়ী স্টাডি করুন। তাহলে আপনারা ৬ মাসের মধ্যে শিখতে পারবেন।

তবে এটা মনে রাখতে হবে আপনার যদি শেখার কোন আগ্রহ থাকে। তাহলে আগ্রহটা কে কাজে লাগান আমি নিশ্চিত আপনি সাকসেস হবেন।

অ্যামাজন এফিলিয়েট শেখার জন্য আপনাকে কোর্স করতে হবে। কারণ সেখানে আপনাকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। অ্যামাজন এফিলিয়েট শেখার জন্য আমাদের দেশে অনেক ভালমানের কোচিং সেন্টারগুলো আছে।

তো ভিউয়াস, যার কাছে আপনি কোর্সটি করতে ইচ্ছুক তাকে বলবেন সে যেন আপনাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়।

অ্যামাজন এফিলিয়েট থেকে আয়।

তো ভিউয়াস, আপনার যদি অ্যামাজন এফিলিয়েট কে পেশা হিসেবে বিবেচনা করেন। তাহলে আপনি অ্যামাজন এফিলিয়েটে সফল হতে পারবেন। 

ভাই অনলাইন মার্কেটিং একটি স্বাধীন পেশা। তো ভাই এ পেশাকে আপনার নিজের অংশ হিসাবে কাজে লাগান। তাহলে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

অ্যামাজন এফিলিয়েটে অনেক জনেই লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতেছে। আবার কেউ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারছে না। এর কারণ, সঠিক পরিশ্রম এবং গাইডলাইনের অভাব।

 

One Comment

  1. সুন্দর ইনফরমেশন দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *