বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়মবালি
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আচ্ছালামু আলাইকুম। সাম্প্রতিক সমায়ের প্রযুক্তি আমাদের নিত্যদিনের জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। প্রযুক্তির ছোঁয়া যেন এখন আকাশচুম্বী। আমাদের কাজের গতি এখন বহুগুণে বৃদ্ধি করে দিয়েছে।
টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে সবাই সর্তকথা অবলম্বন করে। তাই এখন আপনি চাইলে ঘরে বসে, খুব সহজে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে টাকা প্রেরন করতে পারবেন বিকাশের মাধ্যমে। বিকাশ বর্তমান সমায়ের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম,যার মাধ্যমে টাকা নিরাপদ ভাবে প্রেরণ করা যায়।
বিকাশের মাধ্যমে শুধু যে টাকা লেনদেন করা যায় এমনটা ভুল ধারনা। বিকাশের মাধ্যমে বিদুৎ বিল,কেনাকাটা,ব্যাংকিং লোন সহ অনেক কিছুই করা যায় মুহুর্তের মধ্যে।
বিকাশ মাধ্যম শুধু একটি বিষয়ের উপর সীমাবদ্ধ নাই। এই বিকাশ মাধ্যমটি ব্যাবহার করে ব্যাবসা-বানিজ্যের টাকার লেনদেন গুলো খুব সহজে করা যায়। ব্যাবসা বানিজ্যকে মার্চেন্ট একাউন্ট সহজ করে দিয়েছে।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট
প্রযুক্তির ছোঁয়া আমাদের কে চারপাশ থেকে জালের মতো আবদ্ধ করে রেখেছে। প্রযুক্তির চমৎকার ব্যাবহারে আমাদের নিত্য-নতুন জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতিটে ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যাবহার রয়েছে।
করোনাকালীন সমায়ে আমরা ঘরের মধ্যে বন্দী হয়ে আছি। পড়াশোনার আবাসস্থল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণের হার,এমন অবস্থায় ঘর থেকে বের না হাওয়াটাই উত্তম।
প্রযুক্তির নৈতিক ব্যাবহারে এখন আমরা অনলাইন ঘরে বসে ক্লাস করতে পারতেছি, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অনলাইনে অর্ডার করে ক্রয় করতে পারতেছি,এমনকি পৃথিবীর সমস্ত কাজেই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে করতে পারতেছি।
আর প্রযুক্তির অন্যতম একটি বিস্ময়কর দিক হচ্ছে মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন। বাংলাদেশে প্রচলিত জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসগুলো হচ্ছে নগদ,বিকাশ,রকেট, উপায় ইত্যাদি।
তো ভিউয়াস, আমরা অনেকেই জানিনা যে, বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কি? বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট, যার মাধ্যমে বানিজ্যিক অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এবং বানিজ্যিক অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট বেশি ব্যাবহৃত হয়।
ক্রেতারা যখন কোনো পন্য ক্রয় করে তখন তাকে মোবাইল ব্যাংকিং মেন্যুর বিকাশ অপশনে গিয়ে পেমেন্ট করতে হয়,আর তখন তাকে মার্চেন্ট একাউন্ট বলে। মার্চেন্ট একাউন্টে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা থাকার কারনে ব্যাবসায়ীদের কাছে অন্যতম পছন্দ হলো মার্চেন্ট একাউন্ট।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়মাবলি
তো ভিউয়াস, আপনারা যারা নতুন করে ব্যাবসা শুরু করতে চাচ্ছেন কিংবা শুরু করছেন। কিন্তু আপনি এখনো শিওর না কিভাবে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে হয়। সে বিষয়ে এখন বিস্তারিত বলার চেষ্টা করবো তা হলে চলুন জেনে নেই মার্চেন্ট একাউন্টের খোলার নিয়মাবলিঃ-
প্রথমত বিকাশ একাউন্টটি আপনার নিজস্ব একাউন্ট হতে হবে। বিকাশ অ্যাপস ডাউনলোড করা না থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিন।
বিকাশ অ্যাপসে একাউন্ট খোলার পর দুইটি অপশন দেখতে পারবেন।
১. এজেন্ট
২. মার্চেন্ট
উপরোক্ত অপশন দুইটা থেকে মার্চেন্ট অপশনটি সিলেক্ট করুন। ক্লিক করার পর একটি ইন্টারফেস পাবেন উক্ত ইন্টারফেসে সঠিক তথ্য গুলো প্রদান করুন।
বিকাশ আপনার তথ্যগুলো পর্যালোচনা করে দেখবেন। আর বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ক্রিয়েট করতে অনেক তথ্যের প্রয়োজন হয়।
তাহলে চলুন জেনে নেই কোন কোন তথ্যের প্রয়োজন মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য।
১. আপনার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করতে হবে।
২. আপনার যদি ওয়েবসাইট থাকে তা উল্লেখ করতে পারেন। আর যদি না থাকে তাহলে স্কিপ করুন।
৩. আপনার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান কোথায় অবস্থিত অর্থাৎ স্থানের নাম ফরমে উল্লেখ করুন।
৪. আপনার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানটি কোন বিষয়ের উপর করতে চাচ্ছেন তার ধরন কি তা উল্লেখ করুন।
৫. কতো টাকা মাসিক ভিত্তিতে পেমেন্ট গ্রহন করতে পারবেন তা উল্লেখ করুন।
৬. এ ধাপে,ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানটি যদি আপনি নিজে করতে চান তা হলে আপনার নাম উল্লেখ করুন।
৭. আপনার কাছে থাকা সরাসরি ফোন নম্বর ফরমে উল্লেখ করুন।
৮. আপনার সদ্য দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি এবং ন্যাশনাল আইডি কার্ড লাগবে। ন্যাশনাল আইডি কার্ডের পরবর্তীতে পাসপোর্ট,ড্রাইভিং লাইসেন্স হলেও হবে।
৯. ব্যাবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হবে।
১০. সচল ব্যাংকিং একাউন্টের প্রয়োজন হবে।
১১. টিন নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
১২. বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার অনুমতি পত্র প্রয়োজন।
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের সুবিধা
১.আপনি যদি কেনাকাটার জন্য বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে টাকা Payment করেন। তাহলে আপনার কাছে থেকে তুলনমুলক ভাবে কম (১.৭%) টাকা আদায় করা হবে। আর যেখানে ব্যাক্তিগত একাউন্ট থেকে Payment করতে গেলে তুলনামূলক একটু বেশি (১.৮৫%) টাকার প্রয়োজন হবে।
২. পন্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে একস্ট্রা ভাবে কোন প্রকার টাকা আদায় করা হবে না।
৩. ব্যাক্তিগত একাউন্টের মাধ্যমে পন্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিদিষ্ট সীমা আছে। এই সীমার বাইরে ব্যাক্তিগত একাউন্ট থেকে টাকা পেমেন্ট বা লেনদেন করা যাবে না। কিন্তু মার্চেন্ট একাউন্টের ক্ষেত্রে কোন প্রকার লিমিট নাই। আপনার মন যতো চায় ততো টাকা লেনদেন করতে পারবেন।
বিকাশ মার্সেন্ট একাউন্টের অসুবিধা
প্রত্যেক জিনিসের ভালো মন্দ দুটি দিক থাকে। কিন্তু মার্চেন্ট একাউন্ট তার ব্যতিক্রম না। এপর্যায়ে আমরা বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের অসুবিধা সম্পর্কে জানবো।
১. বিকাশ একাউন্ট না থাকলে কখনো বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেনা।
২. হঠাৎ করে টাকার প্রয়োজন তা কখনো তুলতে পারবেনা। কিন্তু ব্যাক্তিগত একাউন্টে নিমিষেই টাকা উত্তোলন করা যায়। বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টে টাকা তোলার জন্য আপনাকে ব্যাংকের শরণাপন্ন হতে হবে। ব্যাংক থেকে সাথে সাথেই টাকাটা উত্তোলন করতে পারবেন না। যখন টাকার প্রয়োজন হবে তার পরের কর্মদিবস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তাহলেই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
বিকাশ খেলতে চাই
জি ভাই খুলতে পারেন।